কুলাউড়া প্রতিনিধি:: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় বোনকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় মেহেদী হাসান (১৬) নামের অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্র হামলার শিকার হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় উপজেলার রাউৎগাঁও স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে এ মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। রাউৎগাঁও স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন ছাত্র খালেদ সাইফুল্লাহ’র সঞ্চালনায় এ প্রতিবাদ সভায় একাত্মতা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক বিলকিস বেগম, শিক্ষক আদিত্য চন্দ্র দাস, মাওঃ আব্দুস সাত্তার, অরুন মোহন নাথ, মো. রুনু মিয়া, মো. তারেক আহমদ, ইন্দ্রজিৎ দেব। এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য দেন আজাদ আহমেদ। মানববন্ধনে বক্তারা ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন এবং পলাতক প্রধান আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান। আহত শিক্ষার্থীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাউৎগাঁও ইউনিয়নের নর্তন গ্রামের বাসিন্দা রজব আলীর ছেলে এলাকার চিহ্নিত বখাটে ইজিবাইক চালক আসাব আলী (১৬) ও রমজান আলীর ছেলে বখাটে আলমাছ আলী (১৫) প্রায়ই স্কুলে যাওয়া-আসার পথে মেহেদির বোনসহ অন্যান্য ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করতো। এ নিয়ে স্থানীয় আমজুপ বাজারে একাধিকবার শালিস বৈঠকও হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করায় মেহেদীর ওপর ক্ষেপে ওঠে আসাব ও আলমাছ। এরই জের ধরে গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় আমঝুপ বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে মেহেদীকে জোরপূর্বক ইজিবাইকে তুলে নিয়ে যায় আসাব ও আলমাছ। এক পর্যায়ে মেহেদী ইজিবাইকের ভেতর থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় ইজিবাইকটি থামিয়ে আসাব, আলমাছ ও তাদের সহযোগিরা মেহেদীর গলায় ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে কিল-ঘুষি মেরে তাকে গুরুতর আহত করে।
পরে মেহেদীর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে এলাকাবাসী আলমাছকে আটক করে। এ সময় প্রধান আসামি আসাব ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে মেহেদীর স্বজন ও স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে মেহেদীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে নয়দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরে মেহেদী। হামলায় কারণে মেহেদীর শ্বাসনালীর ভেতরে ৫টি ও গলায় ২২ টি সেলাই দেয়া হয়েছে। মেহেদীর বাবা বর্গাচাষী চিনু মিয়া বলেন, স্কুলে যাওয়া আসার পথে আমার মেয়ে সহ অন্যান্য ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করতো আসাব ও আলামাছ গংরা। এ নিয়ে আমার ছেলে প্রতিবাদ করায় তাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে আলমাছ ও আসাব আলী পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় ভূষন রায় জানান, এ ঘটনায় ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। খুব দ্রুত তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।
বিএ/১২ নভেম্বর